বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:০২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
বর্ণাঢ্য র‍্যালি’র মধ্য দিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবির হবিগঞ্জ জেলা শাখার ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত। বিএনপি নেতা মহসিন হত্যার বিচারের দাবিতে সচেতন নাগরিক সমাজের মানববন্ধন । হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনকল্পে ভূমির স্থান পুনঃবিবেচনার লক্ষ্যে অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত শায়েস্তাগঞ্জে ডাকাতের হামলায় মহসিন মিয়া নামের এক ব্যবসায়ী নিহত হবিগঞ্জে লিফলেট বিতরণের সময় আ.লীগ নেতা শামীম গ্রেপ্তার ভূয়া জামিন নামায় হবিগঞ্জ কারাগার থেকে বেরিয়ে গেলো ৪ আসামি ॥ আটক ১ চিত্রনায়িকা নিপুণ শিল্পী সমিতি থেকে আজীবন বহিষ্কার। হবিগঞ্জে পুলিশ,আওয়ামী লীগ সহ ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়। হবিগঞ্জ বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত। সাবেক সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহ মারা গেছেন

সাবেক সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহ মারা গেছেন

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২৮ বার পঠিত

২৬ জানুয়ারি ২০২৫ রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও সাবেক সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

আইএসপিআর-এর সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান ঢাকা টাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, ৯০ বছর বয়সি সফিউল্লাহ দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, থাইরয়েডে জটিলতা, ফ্যাটি লিভার, ডিমেনশিয়াসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে স্ট্রেচারে চলাফেরা করছিলেন।

কে এম সফিউল্লাহর জন্ম ১৯৩৪ সালের ২সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে। তার বাবার নাম কাজী আব্দুল হামিদ এবং মায়ের নাম রজ্জব বানু। তিন ভাই ছয় বোনের মধ্যে সফিউল্লাহ ছিলেন ষষ্ঠ। তিনি মুড়াপাড়া হাইস্কুল থেকে ১৯৫১ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপরে মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজে ভর্তি হন।

১৯৫৩ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করার আগেই তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন সফিউল্লাহ। কমিশন লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬৮ সালে সেনা স্টাফ কলেজ (পাকিস্তান) থেকে পিএসসি পাস করেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ঢাকা ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার থেকে ব্রিগেডিয়ার জাহানজেব আরবাব জয়দেবপুরে আসেন দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যদের নিরস্ত্র করতে কিন্তু ব্যর্থ হন তিনি। সে সময় কে এম সফিউল্লাহ দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ছিলেন। ব্রিগেডিয়ার জাহানজেব ফিরে যাওয়ার পর সফিউল্লাহর নেতৃত্বে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট বিদ্রোহ ঘোষণা করে।

তিনটি ব্যাটেলিয়ান নিয়ে জয়দেবপুর থেকে গফরগাঁও হয়ে সিলেটের তেলিয়া লাগয় মাতৃমার পর সেক্টর ও এস ফোর্স গঠন করে যুদ্ধ শুরু করেন সফিউল্লাহ। ২৯ মার্চ ঢাকা আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। কে এম সফিউল্লাহর নেতৃত্বে প্রথমে সেক্টর ও পরে এস ফোর্স গঠন করে প্রথমে সিলেটসহ বিরাট একটি অংশ মুক্তাঞ্চল গড়ে তোলা হয়। তারা একদিকে সিলেট আর একদিকে আশুগঞ্জ, ভৈরব ও মাধবপুর শত্রুমুক্ত করেন। তার নেতৃত্বে আশুগঞ্জ, ভৈরব, লালপুর, আজবপুর, সরাইল, শাহবাজপুর, মাধবপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর শত্রুমুক্ত হয়ে যায়।

১৯৭১ সালে মেজর পদে মুক্তিযুদ্ধ করেন কে এম সফিউল্লাহ। যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি লে. কর্নেল পদে উন্নীত হন। স্বাধীনতার পরে তিনি লে. কর্নেল পদবীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নবগঠিত ৪৬ ব্রিগেডের প্রথম কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি কর্নেল পদে উন্নীত হন এবং ১৯৭২ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীনতা দিবস কুচকাওয়াজে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সৈন্যদলের কুচাকাওয়াজের মূল নেতৃত্বে ছিলেন।

১৯৭২ সালের ৫ এপ্রিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান কে এম সফিউল্লাহকে ডেকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নিতে বলেন। তখন দেশের সামরিক বাহিনীর প্রধান অধিনায়কের দায়িত্বে জেনারেল এম এ জি ওসমানী ছিলেন। সফিউল্লাহর পদবী তখন কর্নেল ছিল। তিনি সেনাপ্রধান হতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নিতে হয়।

১৯৭৩ সালের মাঝামাঝি ব্রিগেডিয়ার এবং একই বছরের ১০ অক্টোবর মেজর জেনারেল পদবীতে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন সফিউল্লাহ। তার সঙ্গে একই দিনে জিয়াউর রহমানও মেজর জেনারেল পদবীতে পদোন্নতি পেয়েছিলেন, যিনি তখন সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে উপ-সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।

১৯৭৫ সালের ২৪ আগস্ট পর্যন্ত সফিউল্লাহ সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ১৬ বছর তিনি বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইডেন আর ইংল্যান্ড।

রাজনীতিতে ও সম্পৃক্ততা ছিল কে এম সফিউল্লাহর। ১৯৯৫ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৬ সালে দলটির মনোনয়নে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

ঢাকাটাইমস/২৬জানুয়ারি

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020
Theme Developed BY ThemesBazar.Com